সর্বশিক্ষা অভিযান - বাংলা রচনা | Bengali Essay on Sarva Shiksha Abhiyan | Bangla Paragraph Writing for Class III - VI
সর্বশিক্ষা অভিযান - বাংলা রচনা | Bengali Essay on Sarva Shiksha Abhiyan | Bangla Paragraph Writing for Class III - VI |
সর্বশিক্ষা অভিযান
সর্বশিক্ষা অভিযানের মূল স্লোগান সবার উন্নতি, সবার জন্য শিক্ষা। ১৯৫০ সালে ভারতবর্ষের সংবিধানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বাসভূমি ব্যবস্থার নির্দেশনা গৃহীত হয়েছিল। সেই সংবিধান স্বীকৃতি জানিয়েছিল সর্বজনীন অবৈতনিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক হবে। কিন্তু ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গ শুধু নয় ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে নিরক্ষরতার অবস্থান বিশেষ উদ্বেগজনক। নব্বই-এর দশক থেকে সারা দেশ জুড়ে সর্বশিক্ষা অর্থাৎ সকলের জন্য শিক্ষার এক নৈতিক অভিযান শুরু হয়। রাজ্য বাজেটের ২৬ শতাংশ অর্থ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ হলেও সমস্যার গভীরে এখনও উপনীত হওয়া যায়নি, ফলে কেন্দ্র, রাজ্য উভয়েই এক অভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। বাংলার ভূ-প্রকৃতির গঠন অনুসারে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সমতলভূমিতে মানুষের প্রধান জীবিকাই হল কৃষি। সেই কৃষক এবং তার সহযােগী অনেক শিশু বাংলায় কৃষিকাজেই মননানিবেশ করে, ফলে গ্রামীণ সমাজব্যবস্থায় বহু কিশাের, কিশােরী বিদ্যায়তনের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হতে পারেনি। সেইসব পিছিয়ে পড়া শিশুদের শিক্ষার আলােকে উদ্ভাসিত করার প্রয়াস হল সর্বশিক্ষা অভিযান। শহর কিংবা গ্রামে অনেক মানব সম্পদ বহুদিন ধরে শিক্ষার আঙিনা থেকে নির্বাসিত। তারা বয়স্ক মানুষের সঙ্গে থেকে সহায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ। সেজন্য শিক্ষাদরদী এবং সরকারের লক্ষ্য হল সেইসব শিশুদের শিক্ষামুখীন করে তােলা। ২০২০ সালের মধ্যে দেশের সমস্ত শিশুর বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন প্রদেশে পর্ষদসমূহের স্বীকৃত বিদ্যালয়ে তাদের প্রবেশের ব্যবস্থা করা, সেইসঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক বিভিন্ন ব্যবধানের বিলুপ্তি সাধন ঘটানাে। শিক্ষার অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে কোনােম্ভরূপ লিঙ্গবৈষম্য, স্বীকৃত হবে না। বিভিন্ন সময়ে এমনকি ইংরেজ আমলে শিক্ষা কমিশন শিক্ষা বিস্তারের বিভিন্ন প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে সেই শিক্ষার লক্ষ্য ছিল পারস্পারিক ভাব বিনিময়ের জন্য উপযুক্ত সংখ্যক শিক্ষিত কর্মী গড়ে তােলা এবং আয়াসী ভারতবাসীর কেরানীকুলের
জীবিকা গ্রহণের জন্য শিক্ষার মােহে স্বেচ্ছা নির্বাসন দিয়েছিল। ফলে দেখা গেছে। শ্রেণিকক্ষের পাঠদানের বিশেষ উপযােগিতা যথার্থতা লাভ করেনি। ২০০৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪ কোটি ১৩ লক্ষ শিশু কোনও দিনই বিদ্যালয়ের মুখে দেখেনি। ২০০৩ সালে স্কুল-ছুট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪ লক্ষ। সেইসব মূক মুখে ভাষা দিতে গিয়ে সরকারের অগ্রণী ভূমিকা বিশেষ প্রয়ােজন হয়ে পড়েছে। সেজন্য নৈশ বিদ্যালয় প্রবর্তন তথাকথিত শিক্ষিত মানুষদের স্বেচ্ছা শ্রমদানের মাধ্যমে শিক্ষার পরিধি বিস্তার লাভ করে এবং শিক্ষার অধিকারকে আরও স্বচ্ছ এবং মনােজ্ঞ করার জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানানাে হয়েছে। একথা সকলেই অনুধাবন করেন যে, শিক্ষা সর্বগ না হলে দেশের আর্থিক উন্নয়ন পূর্ণতা লাভ করে না। মূখের স্বর্গরাজ্যে বসবাস অপেক্ষা আত্মন্বেষণ শ্রেয়। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার এবং সচেতন করার লক্ষ্যে সকলের জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক হওয়া প্রয়ােজন। দেশের অজ্ঞতা ঢেকে রাখার জন্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতি না দিয়ে সমস্ত শিশুকে বিদ্যালয় অভিমুখীকরণের ইতিবাচক এবং গঠনমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। লােভাসক্ত হয়ে নয়; আন্তরিকভাবে শিশুদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা এবং শিশুকে সার্বজনীন করে তােলার প্রয়াস সর্বশিক্ষা অভিযানের মূল বিষয়বস্তু।
সর্বশিক্ষা অভিযান - বাংলা রচনা | Bengali Essay on Sarva Shiksha Abhiyan | Bangla Paragraph Writing for Class III - VI |
সর্বশিক্ষা অভিযান - বাংলা রচনা | Bengali Essay on Sarva Shiksha Abhiyan | Bangla Paragraph Writing for Class III - VI |
সর্বশিক্ষা অভিযান - বাংলা রচনা | Bengali Essay on Sarva Shiksha Abhiyan | Bangla Paragraph Writing for Class III - VI |